স্টাফ রিপোর্টার (কক্সবাজার)
কক্সবাজারের পেকুয়ায় আগামী ২৮ নভেম্বর আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পেকুয়া সদর ইউনিয়নের ভোট গ্রহণে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ই ভি এম) ব্যবহার নিয়ে প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে চরম ভীতি ও শংকা বিরাজ করছে। স্থানীয় ভোটারদের সাথে আলাপ চারিতায় জানা যায়, বিগত নির্বাচন গুলোতে ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিয়েছেন সদরের ভোটাররা। ই ভি এম পদ্ধতি তাদের কাছে একেবারে নতুন। ই ভি এম হাতে কলমে ভোট দেয়া শেখানো হলেও বিড়ম্বনায় পড়তে পারেন তারা। কারণ বেশি সংখ্যক ভোটার অক্ষর জ্ঞানহীন ও স্ব-শিক্ষিত।
দেশে চলমান তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পেকুয়া উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ভোট আগামী ২৮ শে নভেম্বর। এর মধ্যে পেকুয়া সদর ইউনিয়নে এবারই প্রথম ভোট নেয়া হবে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)।
নতুন পদ্ধতিতে ভোট দেয়া নিয়ে ভোটারদের মধ্যে আগ্রহের চাইতে ভয় ও শংকা বিরাজ করছে বেশি। ভোটারদের এ শংকা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন সচেতন মহল। তাদের মতে ই ভি এম পদ্ধতির বিষয়ে অঁজপাড়া গাঁয়ের সাধারণ ভোটারদের জন্য একেবারেই বেমানান। তারা যখন প্রতিক নির্বাচনে দ্বিধাদ্বন্ধে পড়বে তখন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সহযোগিতা চাইবে এমন সময় বাঁধবে বিপত্তি। ভোট কেন্দ্রের ভিতর দারীত্বরত প্রার্থীর এজেন্টরা তুলবে বিভিন্ন ধরণের অভিযোগ। এতে করে নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে নেতিবাচক ফেলবে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের ভাবমূর্তির উপর। নির্বাচন কমিশন হারাবে তার নিরপেক্ষতা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভোটারদের কয়েকজন জানান, পেকুয়ায় শতকরা ৭০ জন মানুষ অশিক্ষিত। তাঁরা এতদিন ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিয়েছেন। ইভিএম তাদের কাছে নতুন। পরপর বেশ কয়েকমাস হাতে কলমে ভোট দেয়া শেখানো না হলে বিড়ম্বনায় পড়তে পারেন তারা। বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে সমস্যাটা বেশি হবে বলে মনে করেন সচেতন মহল। বৃদ্ধদের আঙুলের ছাপ ইভিএমে নাও মিলতে পারে। আধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে জ্ঞান কম থাকায় সেক্ষেত্রে তারা সমস্যায় পড়বেন।
পেকুয়া সদর ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোহাম্মদ কাইয়ুম জানান, সদর ইউনিয়নের ভোটারদের ইভিএম সম্পর্কে তেমন কোনো ধারণা নেই। এবারে প্রথম ইভিএম এর মাধ্যমে ভোট নেওয়ার নির্বাচন কমিশন থেকে ঘোষণা দেওয়া হলে তাদের মধ্যে সৃষ্টি হচ্ছে নানা রকম প্রশ্ন ও শংকা। তাই এবারে ইভিএম সর্ম্পকে সবাইকে সচেতন করে পরের বারে ই ভি এমে ভোট নেয়া হউক।
পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার এডভোকেট দেলোয়ার হোসেন বলেন,‘ইভিএম নিয়ে আমাদের কোনো ধারণা নাই,তৃতীয় ধাপে ইউপি নির্বাচনে পেকুয়া উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২৮ নভেম্বর। এর মধ্যে ইসি থেকে পেকুয়া সদরে ইভিএম এর মাধ্যমে নির্বাচনের ঘোষণা আসায় ভোটারদের মাঝে তৈরি হয়েছে নানা রকম কৌতুহল ও নিরপেক্ষ ভোট গ্রহণে শংকা। নির্বাচন কমিশনারের প্রয়োজন প্রত্যেক ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে অন্ততঃ এক বছর আগে থেকে কয়েকবার করে ইভিএম এর প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা। তাহলে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোটাররা সঠিকভাবে ইভিএমে ভোট দিতে পারবেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল করিম জানান, ইলেক্টোরাল মেশিনে ভোট ( ই ভি এম) গ্রহণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বান কমিশন। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা মোতাবেক আমরা ঐ প্রক্রিয়ায় অগ্রসর হচ্ছি। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ই ভি এম সম্পর্কে ভোটারদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। প্রশিক্ষণ শেষে তারা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট প্রদান করতে পারবে। আর এ প্রক্রিয়ায় কারচুপির কোন ধরণের সুযোগ থাকবে না।