

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরেই অর্থাৎ আগামী ২০২৫ সালের জুন মাসের মধ্যে বাংলাদেশকে নতুন করে ২০০ মিলিয়ন বা ২ বিলিয়ন ডলারের ঋণ সহায়তা দেয়ার আভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠকের পর দাতা সংস্থাটির দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার এ তথ্য জানান।
নতুন এ অর্থায়নের কিছু অংশ বাজেট সহায়তা হিসেবে দেয়ার ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেছেন, বাকি অর্থ গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে, স্বাস্থ্য ও জ্বালানি খাতের জন্য বরাদ্দ দেয়া হতে পারে। তবে সবকিছুই পর্ষদ সভার অনুমোদনের ওপর নির্ভর করছে।
বৈঠকের পর অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগে সন্তুষ্ট বিশ্বব্যাংক। এই দাতা সংস্থাটি বাংলাদেশের সঙ্গে বিভিন্ন খাতে কাজ করতে আগ্রহী।
তিনি বলেন, এ ছাড়া বাংলাদেশে সামপ্রতিক বন্যার ক্ষতি নিরূপণ করে, সেখানেও আর্থিক সহায়তা করবে বিশ্বব্যাংক। রোহিঙ্গা ইস্যুতেও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করবেন তারা।
পরে বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার জানান, আগামী জুনের মধ্যে ২ থেকে ৩ বিলিয়ন ডলারের ঋণ সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক; যা বাংলাদেশের জাতীয় বাজেট সহায়তা, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতসহ ব্যাংক পুনর্গঠনে ব্যবহার হবে। বাংলাদেশের সঙ্গে বিশ্বব্যাংক দীর্ঘদিন ধরে অর্থনৈতিক খাতে কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভবিষ্যতেও বাংলাদেশের জন্য তাদের এই সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মার্টিন রেইজার বলেন, এখন বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সময়। উপদেষ্টার সঙ্গে ব্যাংক খাতসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছি। উপদেষ্টার সংস্কার পরিকল্পনাগুলো শুনে খুবই ভালো লেগেছে। সংস্কার পরিকল্পনায় বিশ্বব্যাংক কীভাবে সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে যুক্ত থাকতে পারে সে বিষয়ে আমরা কথা বলেছি। বাংলাদেশের সূচনালগ্ন থেকে আমরা এই দেশটির সঙ্গে কাজ করছি। আমরা এই সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে চাই। কী পরিমাণ অর্থায়ন দিতে চান এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে পরিচালনা বোর্ড। সেজন্য আমি কোনো অঙ্গীকার করতে পারছি না। তবে আমি এটা বলতে পারি আমরা বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কী পরিমাণ সহায়তা করা যায় সেটাই খুঁজে দেখছি। এই অর্থবছরের মধ্যেই দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ দেয়া যায় কিনা সেটা আমরা বিবেচনা করছি।
গত কয়েকদিনে সরকারের উপদেষ্টাদের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের একাধিক প্রতিনিধিদলের একাধিক বৈঠক হচ্ছে। সেটির ধারাবাহিকতায় দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক কার্যালয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজারের নেতৃত্বে একটি দল নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে বৈঠক করছেন।
রেইজারের সঙ্গে বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলাপে তাদের খুবই ইতিবাচক দেখা গেছে। মোটামুটি একটা চূড়ান্ত পর্যায়ে এসেছে সহযোগিতার বিষয়গুলো। বাজেট সাপোর্ট, হেলথ অ্যান্ড এনার্জি সেক্টর, সার আমদানি, খাদ্য নিরাপত্তা, বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসন, রোহিঙ্গা পুনর্বাসন নিয়ে কথা হয়েছে। অন্যান্য দাতা সংস্থাগুলোর অর্থায়নের বিষয়টি বিশ্বব্যাংক সমন্বয় করবে। একসঙ্গে ফান্ড, কারিগরি সহায়তা তারা করবে। তাদের কোনো কার্পণ্য থাকবে না। ঋণ সহায়তার পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার উদ্যোগগুলোর সঙ্গেও বিশ্বব্যাংক সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে যুক্ত থাকবে বলে জানান উপদেষ্টা।